দশ সফল ব্যক্তিত্বের জীবনে পাওয়া সেরা পরামর্শগুলো
আদর্শ নেতা যারা তাদের পরামর্শ কে না পেতে চান। অনেক সময় তাদের সাধারণ এক পরামর্শ জীবনটা বদলে দিতে পারে। আনতে পারে সফলতা। এখানে ১০ জন নেতা দিয়েছেন তাদের জীবনের পাওয়া সেরা পরামর্শগুলো।
১. লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়াবেন না :
যারা অতিথিসেবা পছন্দ করেন তারাই হোটেল দেন। যারা প্রযুক্তি ভালোবাসেন তারা প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবসা করতে চান। অর্থাৎ আপনি যেমন, তার ওপর ভিত্তি করে কর্ম ঠিক করতে হবে। আর এ পথ থেকে সরে দাঁড়ানো যাবে না। অনলাইন স্টোর দ্য নিউ স্ট্যান্ড-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু ডিচম্যানের পরামর্শ এটি।
২. যা আছে তাকেই পুঁজি করতে হবে : খুব ছোট কিন্তু মারাত্মক শক্তিশালী পরামর্শ এটি। নিজের মেধা, আইডিয়া, সেবা এবং অন্যান্য গুণাগুণ একমাত্র নিজেরই বুঝে নিতে হবে। আর তার মূল্যায়ন একমাত্র নিজেরই করতে হবে। এদের সঠিক পথে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করাটা তারই দায়িত্ব। একজন উদ্যোক্ত হিসাবে মাঝে মাঝে এমন সুযোগ আসবে যা নিজের যোগ্যতার তুলনায় অনেক কম বলে অনুভূত হবে। আর এখানেই আছে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত। মাগনাসিয়াস-এর প্রতিষ্ঠাতা নিল পাওয়েলকে এ পরামর্শ দিয়েছিলেন তার বাবা।
৩. স্বচ্ছতা থাকতে হবে : স্টিভ জবসের সঙ্গে ৯০-এর দশকে কাজ করতেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ম্যাগনেটিক-এর প্রতিষ্ঠাতা জেমস গ্রিন। স্টিভের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েই তিনি শিখেছেন, যেকোনো কাজে স্বচ্ছতা কগ গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী বিষয়। বিশেষ করে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করলে প্রত্যেকের কাজের বিষয়ে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। এতে করে অন্যদের চিন্তা, আশাবাদ এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহনে কখনো ভুল হবে না। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মীকে তো বটেই, এমনকি নিজের একেবারে কাছের মানুষটির মধ্যেও স্বচ্ছতার বিষয়টি ঢুকিয়ে দিতে হবে।
৪. পুরোটুকু পাওয়ার আশা বাদ দিতে হবে : ফক্স নিউজের 'দ্য রিয়েল স্টোরি'র সঞ্চালক এবং 'গেটিং রিয়েল' বইয়ের লেখক গ্রেচেন কার্লসন মনে করেন, পুরোটুকু পেতে হবে বলে কোনো কথা নেই। বাড়িতে থাকা অবস্থায় সংসার-সন্তানকে কি শতভাগ দিচ্ছেন? অফিসে থেকে কি নিজের শতভাগ দিচ্ছেন? এটা দেওয়া সম্ভব নয়। বরং এটা একটা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা যার দ্বারা সব কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
৫. বিশ্লেষণগত যন্ত্রণায় পড়া যাবে না : যুগটাই এমন যে কাজ অনেক দ্রুত সম্পন্ন করতে হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে বিলম্ব করা যাবে না। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু তাই বলে একে নানাভাবে বিশ্লেষণের যাতনায় পড়া যাবে না। এতে কেবল সময়ের অপচয় ঘটবে এবং অবস্থা আরো বেশি ভয়াবহ বলে মনে হবে। চিন্তাশীল হয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর এটাই দ্য বিগ নো প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ডন স্মিথমায়ারের জীবনের সেরা পরামর্শ।
৬. মনোযোগ সহকারে শোনা ভিন্ন বিষয় : কেউ কিছু বলছেন। এটা দুই ভাবে কর্ণস্থ করা যায়। এক, বক্তব্যের ভাষা কানে আসছে ঠিকই, কিন্তু কি বলছেন তাতে মনোযোগ নেই। দ্বিতীয় উপায়ে আপনি মনোযোগ সহকারে শুনছেন এবং তার মর্মার্থ উপলব্ধি করছেন। মনোযোগী শ্রোতা হয়ে ওঠাকে পেশাজীবনের সফলতা লাভের অন্যতম শর্ত বলে মনে করেন ক্রিয়েটিভ মার্কেটিং এজেন্সি 'ইলেভেন, ইনক'-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও কোর্টনি বুচার্ট।
৭. ব্যক্তিত্বের অদ্ভুত বিষয় কাজে প্রয়োগ করুন : বিখ্যাত রেকর্ডিং আর্টিস্ট কেন নরডিন এ পরামর্শ দিয়েছিলেন। একে জীবনের সেরা বলে গণ্য করেছেন ডিজাইনার-ফাউন্ডার এক্সেলারেটর বিডিডাব্লিউ-এর প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড স্লেইডেন। সময়ের সঙ্গে আমাদের মাঝে কিছু পরিবর্তন আসে। একে অনেক সময়ই অদ্ভুত এবং বিদঘুটে মনে হতে পারে। প্রতিদিনের সাধারণ জীবনে এই পরিবর্তন অসাধারণ হয়ে উঠত পারে যদি তার প্রয়োগ ঘটানো যায়। অর্থাৎ এই অন্যরকম বিষয়গুলো কর্মজীবনেও আনতে হবে। তবে কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে।
৮. ক্রিয়া সুযোগ সৃষ্টি করে : কেবিএস নিউ ইয়র্কের সিইও এবং স্পাইস অ্যান্ড অ্যাসাসিনস-এর প্রতিষ্ঠাতা এড ব্রোজার্ডির মনে-প্রাণে বিশ্বাস, আমরা এমন এক যুগে রয়েছি যেখানে কৌশল প্রতিনিয়ত বদলাতে হয়। এতে প্রয়োজন হয় সৃষ্টিশীলতা। নতুন নতুন আইডিয়া সৃষ্টি অতি জরুরি হয়ে ওঠে। এর জন্যে ক্রিয়াশীল হয়ে উঠতে হয়। যত নতুন নতুন উদ্যোগ নেবেন তত বেশি সুযোগ সৃষ্টি হবে।
৯. দল নয়, সংযোগ নয় : ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সফলতার অন্যতম শর্ত দলের সমন্বয়পূর্ণ কাজ। বেশিরভাগ মানুষই এটা বুঝতে পারেন না। কয়েকজন মানুষ একসঙ্গে কাজ করলেই যে দল গঠন হবে এমন কোনো কথা নেই। সত্যিকার টিমওয়ার্কের জন্যে চূড়ান্ত সমন্বয় প্রয়োজন। দলবদ্ধ হয়ে কাজ করলেও প্রত্যেকের নিজস্ব সৃষ্টিশীলতার প্রয়োগ ঘটাতে হয়। আবার একাই পুরো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় যদি নিজের সৃষ্টিশীল চিন্তার পুরোটা ঢেলে দেওয়া যায়। হাভাস ক্রিয়েটিভ গ্রুপ এবং হাভাস ওয়ার্ল্ডওয়াইড-এর গ্লোবাল সিইও অ্যান্ড্রু বেনেট এ পরামর্শকে নিজের জীবনের সেরা বলে মনে করেন।
১০. শূন্যস্থান দেখুন : ধুরন, একটি পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িতে আপনি নিজের গাছের সারি দেখছেন। সেখানে গাছ নয়, বরং দেখতে হবে গাছেদের মাঝের ফাঁকা অংশগুলো। আর সেখানেই সুযোগ লুকিয়ে রয়েছে। জীবনের পরের অংশ কিভাবে শুরু করবেন তার জবাব ওই শূন্যেই লুকিয়ে রয়েছে। ব্যবসার অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে। শূন্যস্থান খুঁজে বের করতে এবং তা পূরণে এসব ধারণা অতি জরুরি বিষয়। এ পরামর্শ দিয়েছেন ইনোভেশন কনসালটেন্সি ফার্ম ডিডিজি-এর এমডি ডেভিড গ্যাসপার।
No comments:
Post a Comment